স্বদেশ ডেস্ক:
মাদারীপুরে ছেলে সন্তান না হওয়ায় অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে শরীরে ইনজেকশনের মাধ্যমে ব্যাটারির অ্যাসিড পুশ করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল শনিবার রাতে মাদারীপুর সদর উপজেলা কালিকাপুর ইউনিয়নের চরনাচনা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ওই গৃহবধূর নাম রোজিনা আক্তার (২২)। তিনি কালিকাপুর ইউনিয়নের নুর হোসেনের (২৪) স্ত্রী। দুমাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন তিনি। ওই ঘটনায় স্থানীয়দের চাপের মুখে স্ত্রীর শরীরে ইনজেকশনের মাধ্যমে অ্যাসিড পুশ করার কথা স্বীকার করেছেন।
স্থানীয়রা জানায়, তিন বছর আগে নুর হোসেন ও রোজিনার বিয়ে হয়। এরপর থেকেই ছোট-খাটো বিষয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া হতো। রোজিনাকে মারধরও করতেন নুর হোসেন। এক বছর আগে তাদের একটি কন্যা সন্তান হয়। ছেলে সন্তান জন্ম না হওয়ায় কলহ আরও বেড়ে যায়।
তারা আরও জানান, দাম্পত্য জীবনের এসব কলহের জেরে মানসিক ও শারীরিকভাবে বেশ কিছুদিন ধরে অসুস্থতায় ভূগছিলেন রোজিনা। দুদিন আগে রাতে তিনি আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন। এ সময় নুর হোসেন ব্যাথার ইনজেকশন দেওয়ার কথা বলে স্ত্রীর শরীরে ব্যাটারির এসিড পুশ করেন। পরে রোজিনা গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তবর্ণ দাগ হয়ে যায়। নুর হোসেন তাকে ডাক্তারের কাছে না নেওয়ায় পরিস্থিতি আরও অবনতি হতে থাকে।
একপর্যায়ে প্রতিবেশীরা গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় তাকে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর নির্দেশ দেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ৯টার দিকে তিনি মারা যান।
চরনাচনা গ্রামের বাসিন্দা মুহসিন উদ্দিন বলেন, ‘রোজিনা বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে আমরা তাকে হাসপাতালে পাঠাই। পরে শুনি সে মারা গেছে। কিন্তু রোজিনা হাসপাতালে যাওয়ার আগে আমদের বলেন, ‘‘আমাকে ইনজেকশন দেওয়ার পরই এমন হয়েছে’’।’
মুহসিন উদ্দিন আরও বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ হলে আমরা নুর হোসেনকে ইনজেকশনে কী ছিল তা জানতে চাপ দেই। পরে নুর হোসেন স্বীকার করেন, ‘‘দুই মাসের সন্তানকে মেরে ফেলতে ইনজেকশনে অ্যাসিড পুশ করেছেন।’’ রোজিনাকে মারার কোনো উদ্দেশ্য তার ছিল না।’
এ ব্যাপারে মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলাম মিঞা বলেন, ‘আমরা এ ব্যাপারে কোনো অভিযোগ পাইনি। তবে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠাচ্ছি। এ ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’